৫ জুন, ২০২৫

মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্ব

মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্ব

শিব্বির আহমদ ওসমানী: পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও হৃদ্যতা, উত্তম আচরণ, ভালোবাসা এবং সৌহার্দ্য, বিশ্বস্ততা ও ভ্রাতৃত্ব একটি ইবাদত ও মহৎ কাজ। এটি এমন কর্তব্য যা আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের ওপর আবশ্যক করে দিয়েছেন এবং এর জন্য প্রতিদান ও সওয়াব ধার্য করেছেন, আর বিরুদ্ধাচরণে রেখেছেন গুনাহ ও শাস্তি।

‘আল-মুসলিমু মিল্লাতুন ওযাহেদা’ অর্থাৎ বিশ্ব মুসলিম এক জাতি এক দেহ।’ মুসলমান মুসলমানের আয়না স্বরূপ। কোনো মুমিন মুসলমানের মধ্যে কোনো দোষ বা অন্যায় দেখা দিলে অপর মুমিন মুসলমান তাকে সেটা দেখিয়ে দেবে, পরিশুদ্ধ করবে, এটা ঈমানি দায়িত্ব। যাতে সে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা লাভ করতে পারে।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে মুমিন মুসলমানের পারস্পরিক দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে অনেক নসিহত পেশ করেছেন।

হজরত নোমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘(দুনিয়ার) সব মুমিন একটি ব্যক্তিসত্তার মতো। যখন তার চোখে ব্যাথ্যা শুরু হয়, তখন তার গোটা শরীরই ব্যাথা অনুভব করে। আর যদি তার মাথা ব্যথা হয় তাতে তার গোটা শরীরই বিচলিত হয়ে পড়ে।’ (মিশকাত)

দুনিয়ার প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তি ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পরস্পর এক দেহ এক জাতির মতো মিলেমিশে বসবাস করবে। তবেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। পরকালের সুনিশ্চিত সফলতা আসবে।

রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা ততক্ষণ বান্দাকে সাহায্য করবেন; যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে লিপ্ত থাকে।’ অর্থাৎ একজন মুমিন মুসলমান তার অন্য ভাইকে সাহায্য করবে এটাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের একান্ত চাওয়া। এ কারণে রাসুল (সাঃ) ঘোষণা দিয়েছেন, প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি; যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’

সুতরাং মতপার্থক্য নয়, বিরোধ নয়, হিংসা-বিদ্বেষ নয়; দুনিয়ার শান্তি এবং পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখাই ঈমানের একান্ত দাবি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশেষকরে ইসলামী আন্দোলনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের পারস্পরিক সুসম্পর্ক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে দুনিয়ার সুখ-শান্তি এবং পরকালীন জীবনের চিরস্থায়ী মুক্তি লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।।

লেখক:
"শিব্বির আহমদ ওসমানী (পিএইচডি গবেষক)
প্রিন্সিপাল, সিলেট ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ"