১৬ আগস্ট, ২০২৪

রাজনৈতিক পট পরিবর্তন পরবর্তী অরাজকতায় নারী অপহরণের অভিযোগ, মামলা দায়ের

রাজনৈতিক পট পরিবর্তন পরবর্তী অরাজকতায় নারী অপহরণের অভিযোগ, মামলা দায়ের

নিজস্ব প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ভাটেরা এলাকার জগতপুর নামক গ্রামে আফাজ আহমদ কাজলের বাড়িতে নারী অপহরণ এবং উদ্ধার প্রচেষ্টার ঘটনায় আফাজ আহমদ কাজল, তার ছেলে ফাহিম আহমদ মুন্না ও তার স্ত্রী শাহনাজ সুমাইয়া লিজার উপর আক্রমণ ও অপহরণ চেষ্টার জের ধরে জগতপুর গ্রামবাসী ও আক্রমনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে সাহান রাজা লিমন নামে এক ব্যক্তি খুন হন। তার বয়স ৩২ বছর। তিনি আম্বরখানা, সিলেটের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ বিগত ৫ই আগস্ট ২০২৪ ইংরেজি সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। দেশে অরাজকতা থাকায় গত ৭ই আগস্ট ২০২৪ ইংরেজি সালে রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সময় সিলেট শহর থেকে আসা কতিপয় ব্যক্তি ভাটেরা জগতপুর নিবাসী আফাজ আহমদ কাজলের বাড়িতে সশস্ত্র আক্রমণ চালায়। তখন গ্রামবাসী লোক মুখে জানতে পারে গ্রামে ডাকাতি সংগঠিত হচ্ছে। তখন গ্রামবাসী আফাজ আহমদ কাজলের বাড়িতে লাঠিসুটা নিয়ে আসেন এবং উভয় পক্ষে তুমুল সংঘর্ষে শাহান রাজা লিমন নামে একজন ব্যক্তি মারা যান। পড়ে আক্রমণকারীরা তাদের অবস্থান ব্যক্ত করে স্থান ত্যাগ করেন। এই নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।
গ্রামবাসী এবং আফাজ আহমদ কাজল বলেন, তার ছেলে ফাহিম আহমদ মুন্না সিলেট শহরে লেখাপড়ার জন্য যায়। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় প্রবাহ ১১, রহিমা মঞ্জিল, তালতলা, সিলেট শহরে ভাড়া বাসায় থাকা গিয়াস উদ্দিন দিলালের মেয়ে শাহানাজ সুমাইয়া লিজার সাথে পরিচয় থেকে প্রেম ও হৃদয়ে গঠিত সম্পর্ক গড়ে উঠে। গিয়াস উদ্দিন দিলালের মূল বাসস্থান সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানার বসন্তপুর গ্রামে। লেখাপড়ার স্বার্থে তারা শহরে অবস্থান করেন। ফাহিম আহমদ মুন্না এবং শাহনাজ সুমাইয়া লিজার গভীর প্রেম চলাকালে শাহনাজ সুমাইয়া লিজার পিতা অন্যত্র তার বিবাহ ঠিক করেন। তার মেয়ে ফাহিম আহমদ মুন্নার সাথে সম্পর্ক আছে বলে তার পরিবারে প্রকাশ করলে তার পিতা খোজ খবর নিয়ে জানতে পারেন ফাহিম আহমদ মুন্না ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ও বাম মতবাদের অনুসারী। অন্যদিকে গিয়াস উদ্দিন দিলাল জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও তার ছেলেরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী। ছাত্র ইউনিয়নের মতবাদকে তারা নাস্তিকবাদী মতবাদ বলে বিশ্বাস করে। এই কারণে শাহনাজ সুমাইয়া লিজাকে নির্যাতন করে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। এক পর্যায়ে তারা কোর্টের মাধ্যমে পালিয়ে বিবাহ করে ফাহিম আহমদ মুন্না তার প্রেমিকা বা স্ত্রীকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে চলে আসে।
তৎকালীন সময় জামায়াত শিবির সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে অত্যন্ত কোনঠাসা থাকায় তারা প্রতিশোধ নিতে ব্যর্থ হয়। ৫ ই আগস্ট ২০২৪ ইংরেজি সালে ক্ষমতার পরিবর্তনে তারা শক্তিশালী হয়ে অসংখ্য সন্ত্রাসী নিয়ে আক্রমণ করে। গ্রামবাসী ডাকাত ভেবে একজন ব্যক্তিকে হত্যা করে। ঘটনা ঘটে, ০৭/০৮/২০২৪ ইংরেজি সালে। তিনি কোর্ট ম্যারেজের ফটোকপি এবং নিকাহনামা ফটোকপি প্রতিবেদক কে প্রদর্শন করেন।
অন্যদিকে গিয়াস উদ্দিন দিলালের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ৬ই আগস্ট ২০২৪ ইংরেজি সালে ফাহিম আহমদ মুন্না তার সহযোগীদের নিয়ে তার মেয়েকে জোর করে অপহরণ করে। তিনি উদ্ধারে গেলে শাহান রাজা লিমন নামে তার আত্মীয়কে ফাহিম আহমদ মুন্না ও তার সহযোগীরা হত্যা করে। তিনি গত ০৯/০৮/২০২৪ ইংরেজি সালে কোতোয়ালি থানায় অপহরণ মামলা করেন। দেলোয়ার হোসেন নামে একজন ব্যক্তি বাদী হয়ে ফাহিম আহমদ মুন্না সহ অনেকের বিরুদ্ধে ১৩ই আগস্ট ২০২৪ ইংরেজি সালে কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা করেন বলে তিনি জানান। কিন্তু ৭ ই ডিসেম্বর ২০২২ ইংরেজি সালে কোর্ট ম্যারেজ বা ১৪/১২-২০২২ ইংরেজি সালের নিকাহ নামার বিষয় শাহনাজ সুমাইয়া লিজার পিতা গিয়াস উদ্দিন দিলাল কোনো সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন। প্রকৃত ঘটনার আরও বিস্তারিত জানার জন্য ফাহিম আহমদ মুন্নার বা শাহনাজ সুমাইয়া লিজার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফাহিম আহমদ মুন্নার পিতা আফাজ আহমদ কাজল জানান, তারা আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তারপর কোথায় আছে তা তিনি জানেন না। ভাটেরা এলাকার জগতপুর গ্রামবাসী জানান, বিবাহ হয়েছে ২০২২ ইংরেজি সালে। এখন উদ্ধারের বিষয় মিথ্যা ও প্রতিশোধ মূলক। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির জন্য প্রকৃত সত্য উদঘাটন সম্ভব হয় নাই।