২৭ এপ্রিল, ২০২৩

লক্ষ্মীপুরে জোড়া খুন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা; মামলা দায়ের

লক্ষ্মীপুরে জোড়া খুন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা; মামলা দায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান (৩৫) এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিব ইমাম (২৬) কে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের প্রতিপক্ষ ব্যক্তিরা। ঘটনাটি ঘটে গত ২৫ শে এপ্রিল ২০২৩ ইংরেজি তারিখ মঙ্গলবার রাতে লক্ষীপুর সদর থানার  বশিকপুর   ইউনিয়নের নাগের হাট এলাকায়।

ঘটনার বিবরণে প্রকাশ গত ২৫শে এপ্রিল মঙ্গলবার রাত অনুমান ১০ ঘটিকার সময় আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং রাকিব ইমাম দলীয় প্রোগ্রাম শেষে নাগেরহাট এলাকায় গেলে পূর্ব শত্রুতার জেরে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম জেহাদী, সাবেক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা লক্ষীপুর সদর থানার মহাদেব পুর গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে স্থানীয় বাসদ এর নেতা আরাফাত ইসলাম, এজাহার নামীয় ৩নম্বর আসামী স্থানীয় বাংলাদেশ ছাত্র-ইউনিয়নের নেতা সোহরাব হোসেন নয়ন সহ আরও ২১/২২ জন সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের আক্রমন করে, তারা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে আব্দুল্লাহ আল নোমান ও রাকিম ইমামকে একা পাইয়া গুলিবিদ্ধ করে এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা মারাত্মক ভাবে আহত করে। তাদের মুমূর্ষ অবস্থায় রাস্তার পাশে ফেলে আসামীরা পালিয়ে যায়। পথচারী ব্যক্তিগন তাদের চিনতে পেরে উদ্ধার করে লক্ষীপুর সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার মাহফুজুর রহমানের সহোদর ভাই আব্দুল্লাহ আল নোমান কে মৃত বলে ঘোষনা করেন। আশংকাজনক অবস্থায় মাহফুজুর রহমানের ফুফাতো ভাই রাকিব ইমামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে রাকিম ইমাম মারা যায়।

ঘটনার জন্য আবুল কাশেম জেহাদী কে ১নম্বর, আরাফাত ইসলামকে ২নম্বর এবং সোহরাব হোসেন নয়নকে ৩নং আসামী বারে বশিক পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহ্ফুজুর রহমান বাদী হয়ে মোট ২৫ জনের বিরুদ্ধে জোড়া হত্যা মামলা রুজু করেন। বাদী মাহফুজুর রহমান চেয়ারম্যান এই প্রতিবেদককে বলেন, বিগত ইউ, পি নির্বাচনে আবুল কাশেম জেহাদী আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ছিল। নির্বাচনের দিনে আমার ভাই আব্দুল্লাহ আল নোমানের সাথে ও ফুফাতো ভাই রাকিম ইমামের সাথে আবুল কাশেম জেহাদীর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। তাদের বাধার কারনে আবুল কাশেম জেহাদী পেশীশক্তি ব্যবহার করে জেতার ক্ষেত্রে তারা বাধা প্রদান করলে তাদের সাথে জেহাদীর শত্রুতা শুরু হয়। অন্যদিকে বাসদ নেতা আরাফাত ইসলামের সাথে মাহফুজুর রহমানের ঘনিষ্ট আত্মীয় হুমায়ূন কবির ও নূর নবী চৌধুরীর দালাল বাজাবের ভূমি ও দোকান কোটা নিয়ে দীর্ঘদিনের শত্রুতা বিদ্যমান ছিল। দালাল বাজার বনিক সমিতি দ্বারা এই সমস্যা নিরসনে একটি বিচার বৈঠক হয়। এই বিচার বৈঠকে নূর নবী চৌধুরী ও হুমায়ূন কবিরের পক্ষে ছিল আব্দুল্লাহ্ আল নোমান ও রাকিব ইমাম। অন্যদিকে নূর নবী চৌধুরী ও হুমায়ূন কবিরের প্রতিপক্ষ বাসদ নেতা আরাফাত ইসলামের পক্ষে ছিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা সোহরাব হোসেন নয়ন। বিচার বৈঠকে আব্দুল্লাহ আল নোমান, রাকিব ইমাম, নূর নবী চৌধুরী ও হুমায়ূন কবির সকলের সাথে আরাফাত ইসলাম ও সোহরাব হোসেন নয়নের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ইয়। বৈঠকে ধাক্কাধাক্কিও হয়। এতে আরাফাত ইসলাম ও সোহরাব হোসেন নয়ন আব্দুল্লাহ আল নোমান ও রাকিব ইমামের উপর ক্ষিপ্ত হয়। সুযোগ সন্ধানী আবুল কাশেম জেহাদী সব বিষয় জেনে আরাফাত ইসলাম ও সোহরাব হোসেন নয়নের সাথে আতাঁত করে মাহফুজুর রহমানের ভাই আব্দুল্লাহ আল নোমান ও রাকিব ইমামকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের টাকা দ্বারা বশীভূত করে এই জোড়া হত্যাকাণ্ড ঘটায়। বাদী মাহফুজুর রহমানের দায়েরী মামলা নং-১২৯(০৪) ২০২৩, তারিখ: ২৫/০৪/২০২৩। লক্ষীপুর সদর থানার ওসি তহিদুল ইসলাম বলেন, মামলা রুজু হইয়াছে। সাক্ষী সালাহ উদ্দিন টিপুর নিকট হতে অনেক তথ্য পেয়েছি। আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।