কলা খেলে শরীর ভালো থাকে, এমন কথা অনেক পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম আছে। কলা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। পুষ্টির ঘাটতি হলে অথবা শরীর দুর্বল হয়ে পড়লে, কলা খাওয়ারই পরামর্শ দেয় পুষ্টিবিদরা। অনেকে স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অতিরিক্ত কলা খেয়ে ফেললে উল্টো বিপদ বাড়বে। বেশি কলা খাওয়ার পরিণতি কী হতে পারে, তা জানালেন পুষ্টিবিদরা।
কলা খুবই উপকারী ফল, তবে দিনে দুইটি বা তিনটির বেশি খাওয়া ঠিক নয়। জানালেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। তাঁর মতে, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, ফাইবার সমৃদ্ধ কলা খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে। একটি কলা থেকে ৬৫ কিলো ক্যালোরি পাওয়া যায়। তা ছাড়া একটি মাঝারি মাপের কলায় থাকে ০.১ গ্রাম ফ্যাট, ১ গ্রাম প্রোটিন, ১৬.২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২৬৪ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম ও ১.১ গ্রাম ফাইবার। তাই দিনে ২ থেকে ৩টি কলা খেলেই তা যথেষ্ট। তবে অবশ্যই শরীরের অবস্থা বুঝে। এর বেশি রোজ রোজ খেতে শুরু করলে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা শুরু হতে পারে।
বেশি কলা খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে:
- ওজন বাড়বে
কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। তবে বেশি কলা খেতে শুরু করলে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়বে। তখন ওজন কমার বদলে বাড়তে শুরু করবে। কলাতে শর্করাও থাকে প্রচুর পরিমাণে। তাই বেশি খেলে পেট-কোমরের মেদ বাড়তে বাধ্য।
- ভোগাবে কোষ্ঠকাঠিন্য
কলায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্টার্চ। আর এই উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়াতে পারে। কলাতে ট্যানিক অ্যাসিড আছে, যা বেশি পরিমাণে শরীরে ঢুকলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতে, যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাঁরা দিনে দুইটির বেশি কলা খাবেন না।
- ডায়াবেটিসের রোগীরা মেপে খান
কলার ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ উপরের দিকেই। এত বেশি মাত্রায় শর্করা রয়েছে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীদের তাই প্রতিদিন কলা খেতে বারণ করা হয়।
- হাইপারক্যালেমিয়া
প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এই অবস্থাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘হাইপারক্যালেমিয়া’ বলে। এই রোগে আক্রান্ত হলে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কিডনির সমস্যা থাকলে কলা খাওয়া উচিত নয়। তা ছাড়া প্রয়োজনের অতিরিক্ত পটাশিয়াম শরীরে ঢুকলে পেশি ও স্নায়ুরও ক্ষতি হতে পারে।
- মাইগ্রেন
কলাতে টাইরামাইন নামে এক ধরনের যৌগ থাকে, যা বেশি মাত্রায় শরীরে গেলে মাইগ্রেনের সমস্যা ভোগাতে পারে। যাদের মাইগ্রেন রয়েছে, তাদের কলা না খাওয়াই ভাল।